হৃদয়জয়ী নেতৃত্বের পথ – লেখক ও গবেষক আনিসুর রহমান এরশাদের দ্বিতীয় বই। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। পড়েছেন মিডিয়া ও জার্নালিজমেও। একযুগেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা, গবেষণা, লেখালেখি ও সম্পাদনার সাথে যুক্ত। জন্ম টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর থানার হাতীবান্ধা গ্রামে।
হৃদয়জয়ী নেতৃত্বের পথ সম্পর্কে বইয়ের প্রচ্ছদে লেখা হয়েছে-
কালজয়ী, ভূবনজয়ী, দ্বিগীজয়ী নেতাও হৃদয়জয়ী না হওয়ায় কালের ঘূর্ণিপাকে হারিয়ে যেতে পারেন। হৃদয় জয় করা যায়- কর্তৃত্বের চেয়ে সেবা করে, পাওয়ার চেয়ে ত্যাগ স্বীকার করে। মানুষের স্বপ্নপূরণ, সার্থক উদ্যোগ গ্রহণ, উৎকর্ষসাধন ও সার্থকতা লাভের মাধ্যমে নেতৃত্ব অর্থবহ হয়। অনেকে রাজ্যজয়ী সম্রাট, ক্ষমতা চর্চাকারী সিইও, সাফল্যের চূড়ায় আরোহনকারী জনপ্রতিনিধিও হৃদয় জয়ে ব্যর্থ হন।
আদর্শ নেতা আদর্শের জন্য লড়েন। সাধারণ থেকে অসাধারণ হন। কঠিনেরে ভালোবাসেন, সেবক থেকে জননেতায় পরিণত হন। ক্ষমতালোভী ক্ষমতার জন্য সংগ্রাম করেন, পেশাদারিত্ব দেখান না, ঈর্ষাকাতর হন। যোগ্য নেতা নেতৃত্বের চর্চা করেন, গণভিত্তি রচনা করেন ও উন্নয়ন নিশ্চিত করেন। এর ফলে গণসমর্থন বাড়ে, অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, বৈষম্য ও অশান্তি দূর হয়।
আলোকিত নেতার দায়িত্বশীল ভূমিকায় গণজোয়ার তৈরি হয়। গণবিপ্লব ও গণসংগ্রামের মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান হয় এবং সম্ভাবনার বিকাশ ঘটে। ফলে গণ-মানুষের মুক্তি নিশ্চিত হয়, সংগ্রামের সুফল বইতে থাকে, ইতিবাচক পরিবর্তন আনে, পরিকল্পিত লক্ষ্য অর্জিত হয়।
নেতৃত্ব একটা শিল্প। প্রভাবিত করার শিল্প। এই শিল্পে দক্ষ কুশলীর প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘অযোগ্য নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সাথে কোনোদিন একসাথে হয়ে দেশের কাজে নামতে নেই। তাতে দেশসেবার চেয়ে দেশের ও জনগণের সর্বনাশই বেশি হয়।’ আসলেই অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে পতন ত্বরান্বিত হয়।
তাই আসুন সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাবের ঘাটতি দূর করি, পকেট ভারি করাকে অগ্রাধিকার দেয়া বন্ধ করি, মানুষের সুখ দুঃখ ভাগাভাগির মানসিকতা তৈরি করি, ন্যায় বিচার নিশ্চিত করি, ন্যায় কথাকে সমর্থন করি, অন্যের সম্মান-মর্যাদা সুরক্ষা করি, ধূর্ততা-চাটুকারিতা-দূরভিসন্ধি দূর করি, অসৎ-দুর্নীতিবাজ-স্বার্থপরদের দাপট-দৌরাত্ম্য বন্ধ করি।
বইটিতে আরো বলা হয়েছে- নতুন নেতৃত্বের আশায় বসে না থেকে নিজেই নেতৃত্ব চর্চায় এগিয়ে আসার কথা। আগে নিজের আখের গুছিয়ে পরে দেশের চিন্তা করার নেতৃত্বের প্রচলন বদলে ফেলার কথা ।
চিন্তার কেন্দ্রস্থল থেকে ‘আমি’ শব্দটি সরিয়ে সেখানে ‘আমরা’ রাখার কথা। কিভাবে নেতা সাফল্য লাভে করেন? দূরদৃষ্টি ও সৃজনশীলতা বাড়ে? কর্মীদের উদ্যম বিকাশ নিশ্চিত হয়। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষদেরকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়। কিভাবে নেতাকে সময়ের সাথে সাথে বদলাতে হয়, নিজের সেরাটা দিতে হয়, সমাধানে ফোকাস করতে হয়, উদ্ভাবনী ক্ষমতা বাড়ানো যায়। কে প্রকৃত নেতা? কিভাবে পরিবর্তনের অনন্য রূপকার হয়ে ওঠে। পরিকল্পিত লক্ষ্য অর্জনের কৌশল কী? উত্থান-পতন ও ঘটনা প্রবাহে সক্রিয় ভূমিকা রাখার উপায় কী?
আস্থা অর্জন ও হৃদয় জয় করার পথ কী? নেতৃত্বের সংকটে কি কি ক্ষতি হয়? সবার ভেতরেই থাকা নেতৃত্ব কেমন অনুশীলনের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে? বইটির নয়টি অধ্যায় হচ্ছে- অর্থবহ নেতৃত্ব আলোকিত নেতায়, সার্থক নেতায় টেকসই উন্নয়ন, নেতৃত্ব চর্চা থেকেই নেতৃত্বের বিকাশ, স্বপ্ন পূরণের পথে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম, উজ্জীবন উদ্ভাবন উন্নতিসাধন, গণভিত্তি গণজোয়ার গণমুক্তি, গণআস্থা ও আগামীর নেতৃত্ব এবং জননেতা থেকে প্রিয়নেতা।
Reviews
There are no reviews yet.